| |||||||||||||||||||||||||||||||||
|
|||||||||||||||||||||||||||||||||
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা
ত্রয়োদশোঽধ্যায়ঃ প্রকৃতিপুরুষ-বিবেক-যোগ
অর্জ্জুনঃ উবাচ (অর্জ্জুন কহিলেন) [হে] কেশব ! (হে কেশব !) [অহং] (আমি) প্রকৃতিং (প্রকৃতি) পুরুষং চ এব (ও পুরুষ) ক্ষেত্রং (ক্ষেত্র) ক্ষেত্রজ্ঞম্ এব চ (এবং ক্ষেত্রজ্ঞ) জ্ঞানং (জ্ঞান) জ্ঞেয়ং চ (ও জ্ঞেয়) এতৎ (এই সমস্ত) বেদিতুম্ (জানিতে) ইচ্চছামি (ইচ্ছা করি) ॥১॥ অর্জ্জুন বলিলেন—হে কেশব ! আমি প্রকৃতি, পুরুষ, ক্ষেত্র, ক্ষেত্রজ্ঞ, জ্ঞান ও জ্ঞেয় এই সমস্তের তত্ত্ব জানিতে ইচ্ছা করিতেছি ॥১॥
শ্রীভগবান্ উবাচ (শ্রীভগবান্ বলিলেন) [হে] কৌন্তেয় ! (হে কুন্তীনন্দন !) ইদং (এই) শরীরং (শরীর) ক্ষেত্রম্ (ক্ষেত্র) ইতি (এই নাম) অভিধীয়তে (কথিত হয়), যঃ (যিনি) এতৎ (এই দেহকে ক্ষেত্র বলিয়া) বেত্তি (জানেন), তং (তাঁহাকে) তদ্বিদঃ (ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের স্বরূপ-জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিগণ) ক্ষেত্রজ্ঞঃ ইতি (‘ক্ষেত্রজ্ঞ’ এই নামে) প্রাহুঃ (অভিহিত করেন) ॥২॥ শ্রীভগবান্ কহিলেন—হে অর্জ্জুন ! এই (স্থূল-সূক্ষ্ম) শরীর ‘ক্ষেত্র’ বলিয়া অভিহিত হয় । আর যিনি এই দেহ সত্ত্বার অনুভবকারী চেতন তাঁহাকেই (জীবত্মাকেই) তত্ত্বজ্ঞগণ ‘ক্ষেত্রজ্ঞ’ বলিয়া থাকেন ॥২॥
[হে] ভারত ! (হে ভারতবংশোদ্ভব !) অপি (আর) সর্ব্বক্ষেত্রেষু (সমস্ত দেহে) মাং চ (নিয়ন্তারূপে অবস্থিত আমাকেও) ক্ষেত্রজ্ঞং (ক্ষেত্রজ্ঞ বলিয়া) বিদ্ধি (জানিবে), ক্ষেত্র ক্ষেত্রজ্ঞয়োঃ (ক্ষেত্রের সহিত জীবাত্মা ও পরমত্মার) যৎ (যে) জ্ঞানং (এবম্বিধ স্বরূপ-জ্ঞান) তৎ (তাহাই) জ্ঞানং (জ্ঞান বলিয়া) মম (আমার) মতং (অভিমত) ॥৩॥ হে ভারত ! আর আমাকেও (অন্তর্যামী পরমাত্মা রূপে) সমস্ত ক্ষেত্রের ক্ষেত্রজ্ঞ বলিয়া জানিবে । ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের (জড় ও জীবাত্মা-পরমাত্মার) যে এই প্রকার যথাযথ তত্ত্বজ্ঞান, তাহাকেই আমি জ্ঞান বলিয়া মনে করি ॥৩॥
তৎ (সেই) ক্ষেত্রং (ক্ষেত্র) যৎ চ (যাহা) যাদৃক্ চ (যেরূপ ধর্ম্মবিশিষ্ট) যৎবিকারি (যাদৃশ বিকারযুক্ত) যতঃ চ (যাহা হইতে) যৎ (যেরূপে উৎপন্ন) সঃ চ (এবং সেই ক্ষেত্রজ্ঞ) যঃ (যৎস্বরূপ) যৎ প্রভাবঃ চ (ও যেরূপ প্রভাববিশিষ্ট) তৎ (তাহা) মে (আমার নিকট হইতে) সমাসেন (সংক্ষেপে) শৃণু (শ্রবণ কর) ॥৪॥ সেই ক্ষেত্র—যে বস্তু, যাদৃশ, ধর্ম্মবিশিষ্ট, যেরূপ বিকারযুক্ত, যাহা হইতে যেরূপে উৎপন্ন, এবং সেই ক্ষেত্রজ্ঞ যে স্বরূপবিশিষ্ট ও যেরূপ প্রভাবযুক্ত, সেই সমস্ত সংক্ষেপে আমার নিকট শ্রবণ কর ॥৪॥
[তৎ] (সেই ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞতত্ত্ব)ঋষিভিঃ (ঋষিগণ কর্ত্তৃক), বিবিধৈঃ (ভিন্ন ভিন্ন) ছন্দোভিঃ (বেদের দ্বারা) হেতুমদ্ভিঃ চ (ধুক্তিযুক্ত) বিনিশ্চিতৈঃ (সিদ্ধান্তপূর্ণ) ব্রহ্মসূত্রপদৈঃ (বেদান্ত বাক্যসকল দ্বারা) পৃথক্ (পৃথক্ পৃথক্ ভাবে) বহুধা এব (বহু প্রকারেই) গীতং (কীর্ত্তিত হইয়াছে) ॥৫॥ সেই ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞ তত্ত্ব—ঋষিগণ, বিভিন্ন বেদবাক্য সমূহ এবং যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্তবিশিষ্ট ব্রহ্মসূত্রনামক বেদান্ত-বাক্য সমূহ পৃথক্ পৃথক্ ভাবে বহু প্রকারেই বর্ণন করিয়াছেন ॥৫॥
মহাভূতানি (আকাশাদি পঞ্চমহাভূত) অহঙ্কারঃ (অহঙ্কার) বুদ্ধিঃ (মহত্তত্ত্ব) অব্যক্তম্ এব চ (ও প্রকৃতি) দশ ইন্দ্রিয়াণি (দশ ইন্দ্রিয়) একং চ (ও এক মন) পঞ্চ (পাঁচটি) ইন্দ্রিয়গোচরাঃ (শব্দ স্পর্শাদি ইন্দ্রিয়ের বিষয়) ; ইচ্ছা (ইচ্ছা), দ্বেষঃ (দ্বেষ) সুখং (সুখ) দুঃখং (দুঃখ) সংঘাতঃ (দেহ) চেতনা (জ্ঞানাত্মিকা মনোবৃত্তি) ধৃতিঃ (ধৈর্য্য) সবিকারম্ (জন্মাদি ষড়্বিকার সহিত) এতৎ (এই সমস্ত) ক্ষেত্রং (ক্ষেত্র বলিয়া) সমাসেন (সংক্ষেপে) উদাহৃতম্ (কথিত হয়) ॥৬–৭॥ আকাশাদি পঞ্চমহাভূত, অহঙ্কার, মহত্তত্ত্ব, প্রকৃতি, চক্ষু কর্ণাদি পঞ্চজ্ঞানেন্দ্রিয়, মুখ হস্তাদি পঞ্চ কর্ম্মেন্দ্রিয়, অন্তরিন্দ্রিয় মন, শব্দস্পর্শাদি পাঁচটী ইন্দ্রিয়ের গ্রাহ্য বিষয় ; ইচ্ছা, দ্বেষ, সুখ, দুঃখ, শরীর, জ্ঞানাত্মিকা মনোবৃত্তি ও ধৈর্য্য,—জন্মাদি ছয়টি বিকারের সহিত—এ সকলই ক্ষেত্র বলিয়া সংক্ষেপে কথিত হয় ॥৬–৭॥
অমানিত্বম্ (মানশূন্যতা), অদম্ভিত্বম্ (গর্ব্বহীনতা), অহিংসা (অহিংসা), ক্ষান্তিঃ (অপমানাদি সহিষ্ণুতা), আর্জ্জবম্ (সরলতা), আচার্য্যোপাসনং (অকৈতবে সদ্গুরুর সেবা), শৌচং (বাহ্য ও অভ্যন্তরের পবিত্রতা), স্থৈর্য্যম্ (সন্মার্গে অবিচলিত নিষ্ঠা), আত্মবিনিগ্রহঃ (শরীর সংযম), ইন্দ্রিয়ার্থেষু (শব্দাদি ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য বিষয়ে) বৈরাগ্যম্ (রুচির অভাব), অনহঙ্কারঃ এব চ (ও অহঙ্কার শূন্যতা), জন্মমৃত্যুজরাব্যাধি দুঃখদোষানুদর্শনম্ (জন্ম, মৃত্যু, জরা ও ব্যাধিতে দুঃখরূপ দোষের চিন্তন), পুত্ত্রদার গৃহাদিষু (পুত্ত্র, স্ত্রী ও গৃহাদিতে) অসক্তিঃ (প্রীতিত্যাগ),অনভিষ্বঙ্গঃ (অপরের সুখে বা দুঃখে অভিনিবেশ রাহিত্য), ইষ্টানিষ্টোপপত্তিষু (অনুকূল বা প্রতিকূল বিষয়ের উপস্থিতিতে) নিত্যং (সর্ব্বদা) সমচিত্তত্বম্ চ (হর্ষবিষাদশূন্যতা), ময়ি চ (এবং আমাতে) অনন্যযোগেন (জ্ঞান, কর্ম্ম, তপস্যা ও যোগ প্রভৃতির অমিশ্রণে) অব্যভিচারিণী (ঐকান্তিকী) ভক্তিঃ (ভক্তি), বিবিক্তদেশসেবিত্বম্ (নির্জ্জন স্থানপ্রিয়তা), জনসংসদি (প্রাকৃত লোকসঙ্ঘে) অরতিঃ (অরুচি), অধ্যাত্মজ্ঞাননিত্যত্বং (আত্মাদিবিষয়ক জ্ঞানের নিত্য অনুশীলন), তত্ত্বজ্ঞানার্থদর্শনম্ (তত্ত্বজ্ঞানের প্রয়োজন যে মোক্ষ তৎসম্বন্ধে আলোচনা), এতৎ (এই বিংশতি সংখ্যক) জ্ঞানম্ (জ্ঞানের সাধন) ইতি (ইহা) [ঋষিভিঃ] (ঋষিগণ কর্ত্তৃক) প্রোক্তম্ (কথিত হইয়াছে), অতঃ (ইহা হইতে) যৎ (যাহা) অন্যথা (বিপরীত) [তৎ] (তাহাই) অজ্ঞানম্ (অজ্ঞান) ॥৮–১২॥ অমানিত্ব, গর্ব্বহীনত্ব, অহিংসা, সহিষ্ণুতা, সরলতা, গুরুসেবা, প্রবিত্রতা, স্থিরতা, আত্মসংযম, ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য-বিষয়ে বলেরাগ্য, অহঙ্কার শূন্যতা, জন্মমৃত্যু-জরাব্যাধি প্রভৃতির দুঃখরূপ দোষদর্শন, স্ত্রী-পুত্ত্র ও গৃহাদিতে আসক্তিশূন্যতা, অন্যের সুখে ও দুঃখে ঔদাসীন্য, ইষ্ট ও অনিষ্ট বস্তু সংযোগে সর্ব্বদা সমচিত্তত্ব, আমাতে অচঞ্চলা ও অবিমিশ্রা ভক্তি, নির্জ্জন প্রিয়তা, লোকসংঘট্টে অরুচি, অধ্যাত্ম-জ্ঞানের নিত্যত্ব-বোধ ও তত্ত্বজ্ঞানের প্রয়োজন উপলব্ধি—ইহাই জ্ঞান বলিয়া উক্ত হইয়াছে । এতদতিরিক্ত সমস্তই অজ্ঞান জানিবে ॥৮–১২॥
যৎ (যাহা) জ্ঞেয়ং (জ্ঞানের বিষয়), যৎ (যাহা) জ্ঞাত্বা (জানিয়া) অমৃতং (আমার ভক্তি রূপ অমৃত) অশ্নুতে (লাভ হয়) তৎ (তাহা) প্রবক্ষ্যামি (প্রকৃষ্টরূপে বলিব) তৎ (তাহা) অনাদি (নিত্য) মৎপরং (আমার আশ্রিত তত্ত্ব) ব্রহ্ম (‘ব্রহ্ম’ শব্দ বাচ্য) ন সৎ (কার্য্যাতীত) ন অসৎ (ও কারণাতীত) উচ্যতে (বলিয়া কথিত হন) ॥১৩॥ যাহা ‘জ্ঞেয়’ অর্থাৎ জ্ঞাতব্য, যাহা অবগত হইলে আত্মারামত্বরূপ অমৃতাস্বাদন অনুভূত হয়—তাহা বলিতেছি । সেই জ্ঞেয় বস্তু অনাদি অর্থাৎ সনাতন, মৎপর অর্থাৎ আমার আশ্রিত ও সদসদনির্ব্বচনীয় ‘ব্রহ্ম’—এই নামে অভিহিত হন ॥১৩॥
সর্ব্বতঃ (সর্ব্বত্র) পাণিপাদং (হস্তপদবিশিষ্ট) সর্ব্বতঃ (সর্ব্বত্র) অক্ষিশিরোমুখম্ (চক্ষু, মস্তক ও মুখবিশিষ্ট) সর্ব্বতঃ শ্রুতিমৎ (সর্ব্বত্র কর্ণ বিশিষ্ট) তৎ (তিনি) লোকে (জগতে) সর্ব্বম্ (সমস্ত বস্তুকে) আবৃত্য (ব্যাপিয়া) তিষ্ঠতি (অবস্থিত রহিয়াছেন) ॥১৪॥ সর্ব্বত্র হস্তপদবিশিষ্ট, সর্ব্বত্র চক্ষু, মস্তক ও মুখসংযুক্ত এবং সর্ব্বত্র কর্ণাদি বিশিষ্ট হইয়া ব্রহ্মাণ্ডস্থ সমস্ত বস্তুকে সম্যক্ ব্যাপিয়া (পরমাত্মারূপে) তিনি বিরাজমান ॥১৪॥
সর্ব্বেন্দ্রিয় গুণাভাসং (সমস্ত ইন্দ্রিয় ও তাহাদের গুণ শব্দাদির সহিত বিরাজমান) [তদপি] (তাহা হইলেও) সর্ব্বেন্দ্রিয় বিবর্জ্জিতম্ (প্রাকৃত ইন্দ্রিয়রহিত), অসক্তং (আসক্তিশূন্য) সর্ব্বভৃৎ চ (শ্রীবিষ্ণুস্বরূপে সকলের পালক), নির্গুণং (সত্ত্বাদি প্রাকৃত গুণাতীত) গুণভোক্তৃ চ এব (এবং ত্রিগুণাতীত ‘ভগ’ শব্দবাচ্য ঐশ্বর্য্যাদি ষড়্গুণেরই আস্বাদক) ॥১৫॥ সেই বৃহত্তত্ত্ব সমস্ত ইন্দ্রিয় ও তৎবিষয় প্রকাশক হইলেও জড়েন্দ্রিয় রহিত, অনাসক্ত হইয়াও (শ্রীবিষ্ণুরূপে) সকলের পালক এবং ত্রিগুণাতীত হইয়াও গুণাত্মিকা প্রকৃতির সেব্য ॥১৫॥
তৎ (সেই তত্ত্ব) ভূতানাং (সর্ব্বভূতের) বহিঃ (বাহিরে) অন্তঃ চ (ও অন্তরে অবস্থিত), অচরং (স্থাবর) চরম্ এব চ (এবং জঙ্গম), তৎ (তিনি) সূক্ষ্মত্বাৎ (প্রাকৃত রূপাদি শূন্যত্ব হেতু) অধিজ্ঞেয়ং (ইহাই সেই বস্তু এইরূপ স্পষ্ট জ্ঞানের অযোগ্য) দূরস্থং (অজ্ঞজনের পক্ষে দূরস্থিত) অন্তিকে চ (বিদ্বান্গণের সম্বন্ধে নিকটে অবস্থিত) ॥১৬॥ সেই তত্ত্ব সমস্ত ভূতের অন্তরে ও বাহিরে বর্ত্তমান, উহাই (শক্তি পরিণামে) চরাচর জগৎ, উহা অতি সূক্ষ্ম বলিয়া প্রাকৃত বিজ্ঞানের অগোচর এবং বহু দূরবর্ত্তী অথচ অতি নিকটেই অবস্থিত ॥১৬॥
তৎ (তিনি) ভূতেষু (পরস্পর ভিন্ন জীব সমূহে) অবিভক্তং চ (এক হইয়াও) বিভক্তম্ ইব চ (ভিন্ন ভিন্ন বলিয়া) স্থিতম্ (প্রতীত হন), [তৎ এব] (তিনিই) ভূতভর্ত্তৃ (শ্রীনারায়ণ স্বরূপে প্রাণি সমূহের পালক) গ্রসিষ্ণু চ (প্রলয়কালে সংহারক) প্রভবিষ্ণু চ (এবং স্থিতিকালে সৃষ্টিকর্ত্তা বলিয়া) জ্ঞেয়ম্ (জ্ঞাতব্য) ॥১৭॥ তিনি এক অখণ্ডতত্ত্ব হইয়াও সর্ব্বভূতে খণ্ডের ন্যায় অবস্থিত অর্থাৎ তিনি প্রত্যেক জীবাত্মার সহিত ব্যষ্টিপুরুষরূপে অবস্থিত হইয়াও সর্ব্বভূতের অন্তর্যামী এক অখণ্ড বিরাট্ সমষ্টিস্বরূপ পরমেশ্বর । তিনিই (শ্রীনারায়ণ স্বরূপে) জীবগণের পালক ও প্রলয়োৎপত্তিকারক বলিয়া কথিত হন ॥১৭॥
তৎ (তিনি) জ্যোতিষাম্ অপি (জ্যোতিষ্কগণের) জ্যোতিঃ (প্রকাশক) তমসঃ (অজ্ঞানের) পরম্ (অতীত বলিয়া) উচ্যতে (কথিত হন) । [তৎ এব] (তিনিই) জ্ঞানং (বুদ্ধিবৃত্তিতে অভিব্যক্ত জ্ঞান), জ্ঞেয়ং (রূপাদির আকারে পরিণত জ্ঞেয়), জ্ঞানগম্যং (অমানিত্বাদি জ্ঞানের সাধন দ্বারা প্রাপ্য), সর্ব্বস্য (সকলের) হৃদি (হৃদয়ে) ধিষ্ঠিতম্ (পরমাত্মাস্বরূপে অবস্থির) ॥১৮॥ তিনি জ্যোতিষ্কগণেরও প্রকাশক এবং অন্ধকারেরও অতীত অব্যক্ত বলিয়া কথিত হন । তিনিই জ্ঞান ও জ্ঞেয়তত্ত্ব, এবং অমানিত্বাদি জ্ঞানসাধ্য, তিনিই সকলের হৃদয়ে পরমাত্মাস্বরূপে অবস্থিত রহিয়াছেন ॥১৮॥
ইতি (এই) ক্ষেত্রং (মহাভূতাদি ধৃতি পর্য্যান্ত ক্ষেত্র) তথা জ্ঞানং (এবং অমানিত্বাদি তত্ত্বজ্ঞানার্থ দর্শন পর্য্যন্ত জ্ঞান) জ্ঞেয়ং চ (ও অনাদি হইতে ধিষ্ঠিত পর্য্যন্ত ব্রহ্ম, ভগবন্ ও পরমাত্মা শব্দবাচ্য জ্ঞেয় ও জ্ঞানগম্য তত্ত্ব) সমাগতঃ (সংক্ষেপে) উক্তং (কথিত হইল) । মদ্ভক্তঃ (আমার ভক্ত) এতৎ (ইহা) বিজ্ঞায় (বিদিত হইয়া) মদ্ভাবায় (আমার প্রতি প্রেম ভক্তি লাভের) উপপদ্যতে (যোগ্য হন) ॥১৯॥ এইরূপে ‘ক্ষেত্র’, ‘জ্ঞান’ ও (ব্রহ্ম, পরমাত্মা ও ভগবান্ শব্দবাচ্য) ‘জ্ঞেয়’ তত্ত্ব সংক্ষেপে বলা হইল । আমার ভক্তগণ এই সমস্ত বিশেষভাবে অবগত হইয়া আমার প্রতি নিরুপাধিক ভাবময় ভজনের যোগ্য হন ॥১৯॥
প্রকৃতিং (প্রকৃতি অর্থাৎ মায়া) পুরুষং চ (ও ক্ষেত্রজ্ঞ শব্দবাচ্য জীবাত্মা) উভৌ অপি (উভয়কেই) অনাদী এব (অনাদি বলিয়াই) বিদ্ধি (জানিবে), বিকারান্ চ (এবং দেহ ও ইন্দ্রিয়াদি-বিকার সকল) গুণান্ চ (ও গুণ পরিণাম সুখ, দুঃখ, শোক, মোহাদিকে) প্রকৃতি সম্ভবাদ্ এব (প্রকৃতি হইতে উদ্ভুত বলিয়াই) বিদ্ধি (জানিবে) ॥২০॥ প্রকৃতি (মায়া) ও পুরুষ (জীবাত্মা) উভয়কেই অনাদি বলিয়া জানিও, এবং দেহ ও ইন্দ্রিয়াদি বিকার সকল ও গুণ পরিণাম সুখদুঃখ শোকমোহাদিকে প্রকৃতি হইতে উৎপন্ন বলিয়াই জানিবে ॥২০॥
কার্য্য কারণ কর্ত্তৃত্বে (কার্য্য শরীর, কারণ ইন্দ্রিয়গণ এবং কর্ত্তা ইন্দ্রিয়াধিষ্ঠাতৃ দেবতা সমূহের তদাকারে পরিণতি বিষয়ে) প্রকৃতিঃ (পুরুষাধিষ্ঠিতা প্রকৃতিই) হেতুঃ (কর্ত্তা বলিয়া) উচ্যতে (কথিত হয়) । পুরুষঃ (জীব) সুখ দুঃখানাং (সুখ ও দুঃখের) ভোক্তৃত্বে (ভোগবিষয়ে) হেতুঃ (কর্ত্তা বলিয়া) উচ্যতে (কথিত হয়) ॥২১॥ কার্য্য—শরীর ও কারণ—ইন্দ্রিয়ের কর্ত্তৃত্বে প্রকৃতিই হেতু বলিয়া উক্ত হইয়াছে এবং সুখ ও দুঃখের ভোগ বিষয়ে (বদ্ধ) জীবকেই হেতু বলা হইয়াছে ॥২১॥
পুরুষঃ (জীব) প্রকৃতিস্থঃ হি (প্রকৃতির কার্য্যদেহে অধিষ্ঠিত বলিয়াই)
প্রকৃতিজান্ (প্রকৃতিজাত) গুণান্ (সুখ দুঃখাদি বিষয় সমূহ) ভুঙ্ক্তে (ভোগ করে) । পুরুষ প্রকৃতির বশীভূত হইয়াই প্রকৃতিজাত সুখদুঃখাদি ভোগ করে । প্রাকৃত গুণে আসক্তিই তাহার উত্তমাধম যোনিতে পুনঃ পুনঃ জন্মলাভের কারণ ॥২২॥
অস্মিন্ (এই) দেহে (শরীরে) পরঃ (জীব ভিন্ন) পুরুষঃ (পরম পুরুষ) উপদ্রষ্টা (জীবের সমীপে পৃথক্ অবস্থান পূর্ব্বক সাক্ষী) অনুমন্তা (অনুমোদনকারী) ভর্ত্তা (ধারক) ভোক্তা (পালক) মহেশ্বরঃ (অধিপতি) পরমাত্মা (অন্তর্যামী পরমাত্মা) ইতি চ অপি (এইরূপও) উক্তঃ (কথিত হন) ॥২৩॥ এই দেহে (জীব হইতে পৃথকতত্ত্ব) পরম পুরুষ—জীবের সমীপে সাক্ষী, অনুমোদনকারী, ধারক, পালক ও মহেশ্বর স্বরূপে অবস্থিত হইয়া পরমাত্মা প্রভৃতি নামেও কথিত হইয়া থাকেন ॥২৩॥
যঃ (যিনি) এবং (এই প্রকারে) পুরুষং (পুরুষ ও পুরুষোত্তম) গুণৈঃ সহ (এবং সুখ দুঃখাদি পরিণামের সহিত) প্রকৃতিং চ (মায়াশক্তি ও জীবশক্তিকে) বেত্তি (জানেন), সঃ (তিনি) সর্ব্বথা (যে কোন অবস্থায়) বর্ত্তমানঃ অপি (বর্ত্তমান থাকিয়াও) ভূয়ঃ (পুনরায়) ন অভিজায়তে (জন্মগ্রহণ করেন না) ॥২৪॥ যিনি এই প্রকারে গুণময়ী প্রকৃতি ও পুরুষ-পুরুষোত্তম (জীবাত্মা-পরমাত্মা) তত্ত্ব অবগত হন, তিনি যে কোন অবস্থায় থাকিয়াও পুনর্জন্ম প্রাপ্ত হন না ॥২৪॥
কেচিং (কেহ কেহ) ধ্যানেন (চিদনুভূতিতে) আত্মনি [স্থিতং] (স্বহৃদয়ে অবস্থিত) আত্মানম্ (পরমাত্মাকে) আত্মনা (স্বয়ংই) পশ্যন্তি (দর্শন করেন), অন্যে (অপর কেহ কেহ) সাংখ্যেন (আত্মানাত্মবিবেক দ্বারা), অপরে (অন্য কেহ কেহ) যোগেন (অষ্টাঙ্গ যোগ দ্বারা), কর্ম্মযোগেন চ (অথবা নিষ্কাম কর্ম্মযোগ দ্বারা), অন্যে তু (আবার অপর কেহ কেহ) এবম্ (এই সকল উপায়) অজানন্তঃ (না জানিয়া) অন্যেভ্যঃ (অন্যের নিকট) শ্রুত্বা (শুনিয়া) উপাসতে (অনুরূপ উপাসনা করেন), তে অপি (তাহারাও) শ্রুতিপরায়ণাঃ [সন্তঃ] (তাদৃশ উপদেশ শ্রবণে নিষ্ঠাযুক্ত হইয়া) মৃত্যুং (মৃত্যুময় সংসারকে) অতিতরন্তি এব (নিশ্চয়ই অতিক্রম করিয়া থাকেন) ॥২৫–২৬॥ কেহ কেহ স্বহৃদয়ে অবস্থিত পরমাত্মাকে স্বয়ংই শুদ্ধচিদনুভূতিতে দর্শন করেন, কেহ কেহ আত্মানাত্মবিবেক দ্বারা এবং কেহ অষ্টাঙ্গযোগ দ্বারা অথবা নিষ্কাম কর্ম্মযোগ দ্বারা, আবার অপর কেহ এই সমস্ত উপায় না জানিয়া অন্যের নিকট শ্রবণ পূর্ব্বক তদনুরূপ উপাসনা করেন ; তাহারা সকলেই শ্রদ্ধালু হইয়া শ্রৌত উপদেশ শ্রবণে মৃত্যুময় এই সংসারকে সুনিশ্চিত অতিক্রম করিয়া থাকেন ॥২৫–২৬॥
[হে] ভরতর্ষভ ! (হে ভরতশ্রেষ্ঠ !) যাবৎ কিঞ্চিৎ (যাহা কিছু) স্থাবরজঙ্গমম্ (স্থাবর ও জঙ্গম) সত্ত্বং (প্রাণী) সংজায়তে (উৎপন্ন হয়), তৎ (সেই সমস্তই) ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞসংযোগোৎ (ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের সংযোগ হইতে জাত বলিয়া) বিদ্ধি (জানিও) ॥২৭॥ হে ভরতশ্রেষ্ঠ অর্জ্জুন ! জগতে স্থাবর ও জঙ্গম যত কিছু পদার্থ উৎপন্ন হয়, তৎসমুদয়ই ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের সংযোগ হইতে জাত জানিও ॥২৭॥
সর্ব্বেষু ভূতেষু (ব্রহ্মাদি স্থাবর পর্য্যন্ত সকল প্রাণীতে) সমং (সমান ভাবে) তিষ্ঠন্তং (অবস্থিত), বিনশ্যৎসু (এবং বিনাশশীল বস্তুর মধ্যে) অবিনশ্যন্তং (অবিনাশী) পরমেশ্বরম্ (পরমাত্মা রূপ পরমেশ্বরকে) যঃ (যিনি) পশ্যতি (দেখেন), সঃ (তিনিই) পশ্যতি (যথার্থ দর্শন করেন) ॥২৮॥ ব্রহ্মাদি স্থাবর পর্য্যন্ত সমস্ত প্রাণীতে সমভাবে অবস্থিত—বিনশ্বর বস্তুর মধ্যে থাকিয়াও অবিনশ্বর-স্বরূপ (পরমাত্মারূপ) পরমেশ্বরকে যিনি দর্শন করেন তিনিই (যথার্থ) দর্শন করেন ॥২৮॥
হি (যেহেতু) [সঃ] (তিনি) সর্ব্বত্র (সর্ব্বভূতে) সমঃ (সমভাবে) সমবস্থিতম্ (ও পূর্ণভাবে বিরাজমান) ঈশ্বরম্ (পরমেশ্বরকে) পশ্যন্ (দেখিয়া) আত্মনা (দুষ্ট স্বভাব দ্বারা) আত্মানং (জীবাত্মাকে) ন হিনস্তি (অধঃপাতিত করেন না), ততঃ (অতএব) পরাংগতিম্ (উত্তমাগতি) যাতি (প্রাপ্তি হন) ॥২৯॥ এইরূপে সর্ব্বত্র (পক্ষপাত শূন্য) সমভাব ও পূর্ণাধিকারে ঐশ্বরিক অধিষ্ঠান দর্শনকারী—দুষ্ট স্বভাব দ্বারা নিজ অধঃপাত ন ঘটাইয়া পরমগতি প্রাপ্ত হন ॥২৯॥
যঃ (যিনি) সর্ব্বশঃ (সমুদয়) কর্ম্মাণি (কর্ম্ম) প্রকৃত্যা এব (দেহেন্দ্রিয়াদি আকারে পরিণতা প্রকৃতি কর্ত্তৃকই) ক্রিয়মাণানি (অনুষ্ঠিত হইতেছে), তথা (এইরূপ) পশ্যতি (দেখেন), সঃ (তিনি) আত্মানম্ (শুদ্ধাত্মাস্বরূপ নিজেকে—জীবাত্মাকে) অকর্ত্তারং (অকর্ত্তা) পশ্যতি (দর্শন করেন) ॥৩০॥ যিনি (দেহ ও ইন্দ্রিয়াদিরূপে পরিণত) প্রকৃতি কর্ত্তৃকই সর্ব্বপ্রকারে সমস্ত কর্ম্ম অনুষ্ঠতি হইতেছে,—এইরূপ দর্শন করেন, তিনিই শুদ্ধাত্ম-স্বরূপ নিজেকে—অকর্ত্তা দর্শন করেন, অর্থাৎ শুদ্ধাত্মা জড়ধর্ম্মী নহেন—ইহা অনুভব করেন ॥৩০॥
যদা (যখন) [সঃ] (তাদৃশ দ্রষ্টা) ভূতপৃথগ্ভাবম্ (স্থাবরজঙ্গমাত্মক ভূত সমূহের সেই সেই পার্থক্য) একস্থম্ (একমাত্র প্রকৃতিতেই অবস্থিত) ততঃ এব চ (এবং সেই প্রকৃতি হইতেই) [ভূতানাং] বিস্তারং (ভূতগণের বিস্তৃতি) অনুপশ্যতি (জানিতে পারেন), তদা (তখন) ব্রহ্ম সম্পদ্যতে (ব্রহ্মস্বরূপ অনুভব করেন) ॥৩১॥ যখন বিবেকী পুরুষ, প্রাণিমাত্রের তত্তৎ জড়ীয় পার্থক্য মূলতঃ একমাত্র প্রকৃতিতেই (ক্ষেত্রত্বে) অবস্থিত ও (সৃষ্টি সময়ে) সেই প্রকৃতি হইতেই আবার তাহাদের বিস্তৃতি— বুঝিতে পারেন, তখন তিনি (প্রকৃতির আপেক্ষিকতায়) ক্ষেত্রজ্ঞসাম্য দর্শনে ব্রহ্মস্বরূপতা অনুভব করেন ॥৩১॥
[হে] কৌন্তেয় ! (হে কুন্তীপুত্র !) অনাদিত্বাৎ (অনাদিত্ব) নির্গুণত্বাৎ (ও গুণ সম্বন্ধ রাহিত্য হেতু) অয়ম্ (এই) অব্যয়ঃ (নিত্যপূর্ণ) পরমাত্মা (পরমাত্মা) শরীরস্থঃ অপি (দেহ মধ্যে থাকিয়াও) [জীববৎ] ন করোতি (কোন কর্ম্ম করেন না) ন লিপ্যতে (এবং ক্ষেত্রধর্ম্মে লিপ্ত হন না) ॥৩২॥ হে অর্জ্জুন ! অনাদি, গুণাতীত ও নিত্যপূর্ণ স্বভাবহেতু এই পরমাত্মা দেহমধ্যে (জীবাত্মার সহিত) অবস্থিত থাকিয়াও (বদ্ধজীবের মত) কোন কর্ম্ম করেন না বা ক্ষেত্রধর্ম্মে লিপ্তও হন না ॥৩২॥
যথা (যেমন) সর্ব্বগতং (সর্ব্বত্র অবস্থিত) আকাশং (আকাশ) সৌক্ষ্ম্যাৎ (সূক্ষ্মতাহেতু) ন উপলিপ্যতে (উপলিপ্ত হয় না) তথা (সেইরূপ) সর্ব্বত্র (সর্ব্বস্থান ব্যাপিয়া) দেহে (দেহ মধ্যে) অবস্থিতঃ (অবস্থিত) আত্মা (জীবাত্মা ও) ন উপলিপ্যতে (দেহ ধর্ম্মে লিপ্ত হন না) ॥৩৩॥ যেমন (পঙ্কাদি) সমস্ত স্থানে অবস্থিত আকাশ সূক্ষ্মত্বহেতু কাহারও সহিত লিপ্ত হয় না, তদ্রূপ দেহের সর্ব্বস্থান ব্যাপিয়া অবস্থিত বিবেকী জীবাত্মাও দেহধর্ম্মে লিপ্ত হন না ॥৩৩॥
[হে] ভারত ! (হে অর্জ্জুন !) যথা (যেমন) একঃ (এক) রবিঃ (সূর্য্য) ইমং (এই) কৃৎস্নং (সমগ্র) লোকম্ (জগৎকে) প্রকাশয়তি (প্রকাশ করেন), তথা (সেইরূপ) ক্ষেত্রী (পরমাত্মা ও জীবাত্মা) কৃৎস্নং (সমস্ত) ক্ষেত্রং (ক্ষেত্রকে) প্রকাশয়তি (প্রকাশিত করেন) ॥৩৪॥ হে ভারত ! এক সূর্য্য যেমন সমগ্র জগৎকে প্রকাশ করেন, তদ্রূপ ক্ষেত্রজ্ঞ পরমাত্মা সমগ্র জগৎকে (জীবাত্মাদিকেও) এবং ক্ষেত্রজ্ঞ জীবাত্মা সমস্ত দেহাদিকে প্রকাশিত করেন ॥৩৪॥
যে (যাঁহারা) এবং (উক্ত প্রকারে) ক্ষেত্রক্ষেত্রজ্ঞয়োঃ (ক্ষেত্রসহ ক্ষেত্রজ্ঞদ্বয়ের) অন্তরং (ভেদ) ভূতপ্রকৃতিমোক্ষং চ (এবং ভূতগণের প্রকৃতি হইতে মোক্ষের উপায়) জ্ঞান চক্ষুষা (জ্ঞান চক্ষু দ্বারা) বিদুঃ (জানিতে পারেন), তে (তাঁহারা) পরম্ (পরমপদ) যান্তি (প্রাপ্ত হন) ॥৩৫॥ যাঁহারা এইরূপে ক্ষেত্রের সহিত ক্ষেত্রজ্ঞদ্বয়ের পার্থক্য এবং জীবগণের প্রকৃতি হইতে মোক্ষের উপায়—জ্ঞানদৃষ্টি দ্বারা অবগত হন, তাঁহারাই পরমপদ লাভ করেন ॥৩৫॥
ইতি ত্রয়োদশ অধ্যায়ের অন্বয় সমাপ্ত ॥ ইতি ত্রয়োদশ অধ্যায়ের বঙ্গানুবাদ সমাপ্ত ॥
—···—
|
সূচিপত্র: মঙ্গলাচরণম্ গ্রন্থ-পরিচয় প্রকাশকের নিবেদন ১ সৈন্য-দর্শন ২ সাংখ্যযোগ ৩ কর্ম্মযোগ ৪ জ্ঞানযোগ ৫ কর্ম্মসন্ন্যাসযোগ ৬ ধ্যানযোগ ৭ জ্ঞানবিজ্ঞানযোগ ৮ তারকব্রহ্মযোগ ৯ রাজগুহ্যযোগ ১০ বিভূতিযোগ ১১ বিশ্বরূপ-দর্শনযোগ ১২ ভক্তিযোগ ১৩ প্রকৃতিপুরুষ-বিবেক-যোগ ১৪ গুণত্রয়-বিভাগ-যোগ ১৫ পুরুষোত্তমযোগ ১৬ দৈবাসুরসম্পদ্-বিভাগ যোগ ১৭ শ্রদ্ধাত্রয়-বিভাগ-যোগ ১৮ মোক্ষযোগ গীতামাহাত্ম্যম্ |
||||||||||||||||||||||||||||||||
বৃক্ষসম ক্ষমাগুণ করবি সাধন । প্রতিহিংসা ত্যজি আন্যে করবি পালন ॥ জীবন-নির্ব্বাহে আনে উদ্বেগ না দিবে । পর-উপকারে নিজ-সুখ পাসরিবে ॥ | |||||||||||||||||||||||||||||||||
© Sri Chaitanya Saraswat Math, Nabadwip, West Bengal, India. For any enquiries please visit our contact page. |